নবম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায়: ভূমিরূপ গঠন প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ – সম্পূর্ণ MCQ, VSAQ, SAQ ও ব্যাখ্যামূলক Q&A

নবম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায়: ভূমিরূপ গঠন প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ – সম্পূর্ণ MCQ, VSAQ, SAQ ও ব্যাখ্যামূলক Q&A


নবম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায়: ভূমিরূপ গঠন প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ – সম্পূর্ণ MCQ, VSAQ, SAQ ও ব্যাখ্যামূলক Q&A


নবম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায় সম্পূর্ণ প্রশ্নোত্তর – MCQ, VSAQ, SAQ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তরসহ। হিমালয়, আগ্নেয়, ভঙ্গিল, স্তূপ, ক্ষয়জাত পর্বত এবং মালভূমির গুরুত্বসহ Class 9 Geography WB Board শিক্ষার্থীদের জন্য একনজরে রিভিশন গাইড। দ্রুত প্রস্তুতির জন্য পড়ুন এবং পরীক্ষা প্রস্তুত হন।


Class 9 Geography | Chapter 4 | WB Board
(প্রতিটি প্রশ্নের মান – 1)

প্রশ্ন ও উত্তর

  1. টেবিলল্যান্ড নামে পরিচিত –
    (A) পর্বত
    (B) মালভূমি
    (C) পাহাড়
    (D) সমভূমি
    উত্তর: (B) মালভূমি

  2. শিলাস্তরে চাপের কারণে ভাঁজ সৃষ্টি হলে গঠিত হয় –
    (A) ভঙ্গিল পর্বত
    (B) স্তূপ পর্বত
    (C) আগ্নেয় পর্বত
    (D) সঞ্চয়জাত পর্বত
    উত্তর: (A) ভঙ্গিল পর্বত

  3. বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত আগ্নেয় পর্বত হলো –
    (A) ফুজিয়ামা
    (B) কটোপাক্সি
    (C) ওজোস ডেল সালাডো
    (D) মাউন্ট হেলমস
    উত্তর: (C) ওজোস ডেল সালাডো

  4. মহাদেশীয় পাতের গড় ঘনত্ব (প্রতি ঘন সেমি) প্রায় –
    (A) 270 গ্রাম
    (B) 290 গ্রাম
    (C) 260 গ্রাম
    (D) 310 গ্রাম
    উত্তর: (A) 270 গ্রাম

  5. ঝাড়খণ্ডের রাজমহল একটি –
    (A) স্তূপ পর্বত
    (B) ক্ষয়জাত পর্বত
    (C) ভঙ্গিল পর্বত
    (D) আগ্নেয় পর্বত
    উত্তর: (B) ক্ষয়জাত পর্বত

  6. পাকিস্তানের সল্টরেঞ্জ হলো একটি –
    (A) ভঙ্গিল পর্বত
    (B) আগ্নেয় পর্বত
    (C) স্তূপ পর্বত
    (D) ক্ষয়জাত পর্বত
    উত্তর: (C) স্তূপ পর্বত

  7. ‘টেল’ ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়—
    (A) নদীর সঞ্চয়কার্য থেকে
    (B) হিমবাহের কাদা ও নুড়ি জমে
    (C) উপকূলে বালি জমে
    (D) বায়ুর ক্ষয়কার্যে
    উত্তর: (B) হিমবাহের কাদা ও নুড়ি জমে

  8. ভারতের একটি উচ্চ মালভূমির উদাহরণ –
    (A) লাদাখ
    (B) ছোটোনাগপুর
    (C) মালব
    (D) দাক্ষিণাত্য
    উত্তর: (A) লাদাখ

  9. বিদার অঞ্চলে অগ্ন্যুদ্‌গমের ফলে যে ভূমিরূপ তৈরি হয়েছে তা হলো –
    (A) স্তূপ পর্বত
    (B) লাভা মালভূমি
    (C) পর্বতবেষ্টিত মালভূমি
    (D) আগ্নেয়গিরি
    উত্তর: (B) লাভা মালভূমি

  10. সঠিক জোড়টি নির্ধারণ করো –
    (A) ভঙ্গিল পর্বত – ব্যারেন
    (B) স্তূপ পর্বত – হিমালয়
    (C) আগ্নেয় পর্বত – সাতপুরা
    (D) ক্ষয়জাত পর্বত – আরাবল্লী
    উত্তর: (D) ক্ষয়জাত পর্বত – আরাবল্লী

  11. ভূ-আলোড়ন যদি অনুভূমিকভাবে কার্যকর হয়, তবে গঠিত হয় –
    (A) স্তূপ পর্বত
    (B) ভঙ্গিল পর্বত
    (C) গ্রস্ত উপত্যকা
    (D) মহাদেশ
    উত্তর: (B) ভঙ্গিল পর্বত

  12. আলফ্রেড ওয়েগনার তাঁর ‘মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব’ প্রকাশ করেন –
    (A) 1914 সালে
    (B) 1896 সালে
    (C) 1922 সালে
    (D) 1912 সালে
    উত্তর: (D) 1912 সালে

  13. জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট আসলে একটি –
    (A) বনভূমি
    (B) স্তূপ পর্বত
    (C) কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল
    (D) বৃক্ষহীন এলাকা
    উত্তর: (B) স্তূপ পর্বত

  14. যে নদী গ্রস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তা হলো –
    (A) সিন নদী
    (B) রাইন নদী
    (C) ভিলা নদী
    (D) গোদাবরী নদী
    উত্তর: (B) রাইন নদী

  15. ভারতে অবস্থিত ক্ষয়জাত মালভূমির একটি উদাহরণ হলো –
    (A) দাক্ষিণাত্য মালভূমি
    (B) ছোটোনাগপুর মালভূমি
    (C) তিব্বত মালভূমি
    (D) মালব মালভূমি
    উত্তর: (B) ছোটোনাগপুর মালভূমি



অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (VSAQ)

ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ
Class 9 Geography | Chapter 4 | WB Board
(প্রতিটি প্রশ্নের মান – 1)

  1. মহাকাল ও মহাদেব কোন ধরনের পর্বত?
    👉 উত্তর: ক্ষয়জাত পর্বত।

  2. পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ কোনটি?
    👉 উত্তর: গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র নদীর বদ্বীপ।

  3. একটি ভূগাঠনিক সমভূমির উদাহরণ দাও।
    👉 উত্তর: তুরান নিম্নভূমি।

  4. তিব্বতীয় পাত ও ভারতীয় পাতের মিলনরেখাকে কী বলা হয়?
    👉 উত্তর: সিন্ধু সিবনরেখা।

  5. ভারতের একটি স্তূপ পর্বতের নাম লেখো।
    👉 উত্তর: সাতপুরা পর্বত।

  6. সমপ্রায় সমভূমিতে অবশিষ্ট ক্ষয়প্রাপ্ত অংশকে কী বলা হয়?
    👉 উত্তর: মোনাডনক।

  7. ভারতে অবস্থিত একটি গ্রস্ত উপত্যকার নাম লেখো।
    👉 উত্তর: নর্মদা উপত্যকা।

  8. চ্যুতি বলতে কী বোঝায়?
    👉 উত্তর: ভূত্বকে ফাটল বরাবর শিলা সরণকে চ্যুতি বলে।

  9. মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা কোথায় রয়েছে?
    👉 উত্তর: আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে।

  10. এশিয়ার দুটি পর্বতগ্রন্থির নাম লেখো।
    👉 উত্তর: পামির গ্রন্থি ও আর্মেনীয় গ্রন্থি।

  11. গ্রাবেন কোথায় গঠিত হয়?
    👉 উত্তর: দুটি চ্যুতির মাঝের নিম্ন অঞ্চলে।

  12. একটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ দাও।
    👉 উত্তর: উত্তর আমেরিকার ক্যালেডোনিয়ান পর্বত।

  13. ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কোনটি?
    👉 উত্তর: কাঞ্চনজঙ্ঘা।

  14. একটি পর্বতবেষ্টিত মালভূমির উদাহরণ দাও।
    👉 উত্তর: তিব্বত মালভূমি।

  15. হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি কোন অগভীর সমুদ্র থেকে?
    👉 উত্তর: টেথিস সাগর থেকে।


সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ)

ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ
Class 9 Geography | Chapter 4 | WB Board
(প্রতিটি প্রশ্নের মান – 2)


1. পর্বতের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

👉 উত্তর:

  • পর্বতের উচ্চতা সাধারণত ৯০০ মিটারের বেশি হয়।
  • ঢাল খুব খাড়া এবং শৃঙ্গবিশিষ্ট, উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ায় অনেক শৃঙ্গ বরফে আচ্ছাদিত থাকে।


2. আগ্নেয় পর্বতের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

👉 উত্তর:

  • ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে লাভা আকারে বেরিয়ে এসে ভূপৃষ্ঠে জমে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি করে।
  • এদের উৎপত্তি মূলত পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ শক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত।


3. ভূগাঠনিক সমভূমি কয় প্রকার ও কি কি?

👉 উত্তর:
ভূ-আন্দোলনের ফলে সমভূমি গঠিত হলে তাকে ভূগাঠনিক সমভূমি বলে। এদের দুটি ধরন আছে—
(ক) উন্নত সমভূমি, (খ) অবনত সমভূমি।


4. পাত বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:
পৃথিবীর অভ্যন্তরে অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের ওপর ভাসমান কঠিন খণ্ডাকৃতি অংশ, যা অভ্যন্তরীণ স্রোতের প্রভাবে ক্রমাগত সরে যায়, তাকে পাত বলে।


5. পর্যায়ন কাকে বলে?

👉 উত্তর:
বহির্জাত শক্তির ক্ষয়, পরিবহন ও সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ ধীরে ধীরে সমতল হওয়ার প্রক্রিয়াকে পর্যায়ন বলে। ক্ষয়ের চূড়ান্ত সীমাকেই এখানে সাধারণ তল বা পেনিপ্লেন বলা হয়।


6. ভাঁজ বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:
ভূত্বকে প্রবল পার্শ্বচাপ বা গিরিজনি আলোড়নের ফলে পাললিক শিলাস্তর তরঙ্গাকৃতির বাঁক নিলে তাকে ভাঁজ বলে।


7. অন্তর্জাত ও বহির্জাত প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পর্ক কী?

👉 উত্তর:
অন্তর্জাত শক্তি ভূপৃষ্ঠকে উঁচু-নিচু করে তোলে এবং বহির্জাত শক্তি সেই ভূমিকে ক্ষয়, পরিবহন ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে পরিবর্তিত করে। এদের সম্মিলিত ক্রিয়ার ফলেই পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ তৈরি হয়।


8. লোয়েস কী?

👉 উত্তর:
বাতাস মরুভূমি থেকে সূক্ষ্ম বালি বহন করে অন্যত্র জমা করলে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে লোয়েস সমভূমি বলে। যেমন— চীনের হোয়াংহো নদী অববাহিকার লোয়েস সমভূমি।


9. লাভা মালভূমি বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:
অগ্ন্যুৎপাতের সময় বেরিয়ে আসা লাভা ভূপৃষ্ঠে জমে শক্ত হয়ে গেলে যে মালভূমির সৃষ্টি হয় তাকে লাভা মালভূমি বলে।


10. পামির মালভূমিকে ‘পৃথিবীর ছাদ’ বলা হয় কেন?

👉 উত্তর:
পামির পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি, যার গড় উচ্চতা প্রায় ৪৮৭৩ মিটার। উচ্চ অবস্থান ও সমতল উপরের কারণে একে পৃথিবীর ছাদ বলা হয়।


11. বহির্জাত ও অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:

  • পৃথিবীর উপরের প্রাকৃতিক শক্তির ক্রিয়াকে বহির্জাত প্রক্রিয়া বলে।
  • পৃথিবীর অভ্যন্তরের শক্তির ক্রিয়াকে অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলা হয়।


12. সমপ্রায় ভূমি কী?

👉 উত্তর:
দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয়ের ফলে মালভূমি ও উচ্চভূমি প্রায় সমতল বা ঢেউ-খেলানো ভূমিতে রূপান্তরিত হলে তাকে সমপ্রায় ভূমি বলে।


13. পর্বতবেষ্টিত মালভূমি বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:
যে মালভূমি চারপাশে পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত থাকে তাকে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি বলে। যেমন— তিব্বত মালভূমি।


14. ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলতে কী বোঝো?

👉 উত্তর:
একটি বড় মালভূমি যখন প্রাকৃতিক ক্ষয় ও ভাঙনের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাধিক অংশে বিভক্ত হয়, তখন তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে। যেমন— ছোটোনাগপুর মালভূমি।


সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর (৩ মার্কস)

ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ
Class 9 Geography | Chapter 4 | WB Board


প্রশ্ন: নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ’ – ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:

পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে বহু ভঙ্গিল পর্বত অভিসারী পাতসীমায় মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে গঠিত হয়েছে। যেসব পর্বতের সৃষ্টি টারসিয়ারি যুগের শেষভাগে (প্রায় ৪ থেকে ৭ কোটি বছর আগে) হয়েছে, ভূতাত্ত্বিক দৃষ্টিতে সেগুলোকে নবীন পর্বত বলা হয়। এসব অঞ্চলের গঠন প্রক্রিয়া আজও সক্রিয়, কারণ এখানে পাতের গতি অব্যাহত রয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ চাপ ও শক্তি মুক্তির কারণে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে। হিমালয়, আল্পস ও রকি পর্বত নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।



প্রশ্ন: অভিসারী পাত সীমানায় ভূমিকম্প হয় কেন?

উত্তর:

যখন পৃথিবীর তলদেশের প্লেটগুলো একে অপরের দিকে ধাক্কা খায়, তখন সেই সীমান্তকে অভিসারী পাত সীমানা বলা হয়। এই এলাকায় মহাসাগরীয় প্লেটটি মহাদেশীয় প্লেটের নিচে নিমজ্জিত হয়। নিমজ্জিত প্লেটের কিছু অংশ অ্যাসথেনোস্ফিয়ারে গলে গিয়ে আবার ভূপৃষ্ঠে উঠে আসে, যার ফলে আগ্নেয়গিরি ও আগ্নেয় দ্বীপ তৈরি হয়। প্লেটগুলো ক্রমাগত আন্দোলনশীল এবং এই অংশ অস্থিতিশীল হওয়ায় অভিসারী পাত সীমানায় প্রায়ই ভূমিকম্প ও ভূ-আলোড়ন ঘটতে থাকে।



প্রশ্ন: পাত গাঠনিক তত্ত্ব অনুযায়ী ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর:

পাত সঞ্চালন তত্ত্ব অনুসারে পৃথিবীর ভূত্বক বিভিন্ন গতিশীল প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত, যা অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের উপরে ভাসমান থাকে। যখন দুটি মহাদেশীয় প্লেট অভিসারী সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ করে, তখন সংযোগস্থলে প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়। এই চাপের ফলে শিলাস্তরগুলো ভাঁজ আকারে বিকৃত হয়। ক্রমশ ভাঁজগুলি বড় ও উঁচু হয়ে উঠে এবং একে অপরের কাছাকাছি অবস্থান করে, যা ভঙ্গিল পর্বতের জন্ম দেয়।


প্রশ্ন:পাত (Plate) কী?

উত্তর:

প্লেট হলো পৃথিবীর শক্ত ও কঠিন ভূত্বকের খণ্ড, যা অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের উপরে ভাসমান ও ধীরে চলনশীল। প্রথমে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কানাডার ভূ-পদার্থবিদ জে. টি. উইলসন ‘প্লেট’ শব্দটি ব্যবহার করেন। পৃথিবীর ভূত্বকে মোট ৭টি বড় প্লেট, ৪টি মাঝারি প্লেট এবং ২০টিরও বেশি ছোট প্লেট বিদ্যমান।

উদাহরণ: ইউরেশিয়ান প্লেট, প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট।



প্রশ্ন: অপসারী বা প্রতিসারী পাতসীমানা কী?

উত্তর:

যেখানে দুটি প্লেট একে অপর থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়, সেই সীমান্তকে অপসারী বা প্রতিসারী পাতসীমানা বলা হয়। এখানে নতুন ভূমিরূপ তৈরি হয়, তাই এটিকে গঠনকারী পাতসীমানা বলা হয়।


প্রশ্ন: অভিসারী পাতসীমানা কী?

উত্তর:

যেখানে দুটি প্লেট একে অপরের দিকে ধাক্কা দেয়, সেই সীমান্তকে অভিসারী পাতসীমানা বলা হয়। এই এলাকায় ভূত্বকের কিছু অংশ ধ্বংস হয়, তাই এটিকে ধ্বংসাত্মক পাতসীমানাও বলা হয়।
উদাহরণ: উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকান প্লেট এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের সীমানা।


প্রশ্ন:চ্যুতি কী?

উত্তর:

যখন শিলাস্তরে ফাটল বরাবর একপাশের শিলা অন্যপাশের তুলনায় উল্লম্ব, অনুভূমিক বা তির্যকভাবে উর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী হয়, তখন তাকে চ্যুতি বলা হয়।


প্রশ্ন:পামির মালভূমিকে ‘পৃথিবীর ছাদ’ কেন বলা হয়?

উত্তর:

পামিরের উচ্চতা প্রায় ৪,৮৭৩ মিটার, যা পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মালভূমি। যদিও উপরের অংশ কিছুটা সমতল এবং চারপাশে খাড়া ঢাল রয়েছে, এত উচ্চ অবস্থানের কারণে এটি ‘পৃথিবীর ছাদ’ নামে পরিচিত।


প্রশ্ন: ডেকাট্রাপ (Decantrap) কী?

উত্তর:

‘ডেকান’ মানে দাক্ষিণাত্য এবং সুইডিশ শব্দ ‘Trap’ মানে সিঁড়ির ধাপ। ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি বিভিন্ন সময়ে আগ্নেয় লাভার জমায় তৈরি হয়েছে এবং পরে অসম ক্ষয়ের কারণে সিঁড়ির মতো ধাপযুক্ত আকার ধারণ করেছে। তাই এটিকে ডেকাট্রাপ বলা হয়।


প্রশ্ন:লাভা মালভূমি কী?

উত্তর:

যখন ভূত্বকের ফাটল বা ছিদ্রপথের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ গরম ম্যাগমা ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে এবং শীতল হয়ে কঠিন হয়ে যায়, তখন যে মালভূমি তৈরি হয় তাকে লাভা মালভূমি বলা হয়।
উদাহরণ: দাক্ষিণাত্য মালভূমি।


প্রশ্ন: পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ সমভূমি অঞ্চলে বসবাস করেন’ – ভৌগলিক কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:

পৃথিবীর অধিকাংশ সমভূমি নদী থেকে আসা পলি জমার মাধ্যমে গঠিত, ফলে এই অঞ্চলের মাটি উর্বর এবং কৃষিকাজের জন্য উপযোগী। সমভূমির ভূমিরূপ সমতল হওয়ায় যেকোনো ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা সহজেই গড়ে ওঠে, ফলে যোগাযোগ এবং বাণিজ্যও দ্রুত হয়। এছাড়াও, সমভূমি অঞ্চলে কৃষি এবং খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ এলাকায় উন্নত অবকাঠামো তৈরি হয়, যা শিল্প ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে উৎসাহিত করে। এই কারণে মানুষের বসবাস ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমভূমি অঞ্চল সবচেয়ে আকর্ষণীয়।


প্রশ্ন: প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা কিভাবে গঠিত হয়েছে?

উত্তর:

প্রশান্ত মহাসাগরকে বেষ্টন করে মহাদেশগুলির প্রান্তে অসংখ্য আগ্নেয়গিরি এক বলয়ের আকারে সাজানো আছে, যাকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বলা হয়। এই আগ্নেয় বলয় মূলত প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের সীমান্ত বরাবর গঠিত, যেখানে পশ্চিমে ইউরেশিয়ান প্লেট এবং পূর্বে আমেরিকান প্লেট অবস্থান করে। এখানে ভারী প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটটি হালকা ইউরেশিয়ান ও আমেরিকান প্লেটের নিচে নিমজ্জিত হয়। নিমজ্জিত প্লেটটি গুরুমণ্ডলের উত্তাপে গলে ম্যাগমায় পরিণত হয় এবং গলিত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে আগ্নেয়গিরি ও আগ্নেয় দ্বীপপুঞ্জ গঠন করে। এভাবে প্রশান্ত মহাসাগরে বলয়ের আকারে আগ্নেয় দ্বীপপুঞ্জ বা আগ্নেয় মেখলা তৈরি হয়।


প্রশ্ন: গ্রস্ত উপত্যকা কাকে বলে?

উত্তর:

যে উপত্যকা দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মাঝের অংশ নীচে বসে তৈরি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলা হয়।

উৎপত্তির কারণ: প্রবল ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরে টান ও সংকোচন ঘটে, যার ফলে ফাটল বা চ্যুতি তৈরি হয়। দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ ভূ-আলোড়নের কারণে নীচে নামলে গ্রস্ত উপত্যকা গঠিত হয় এবং পাশের উঁচু অংশগুলো স্থূপ (হরস্ট) হিসেবে দেখা যায়।

উদাহরণ: রাইন নদীর উপত্যকা।


প্রশ্ন:ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য লিখো।

উত্তর:

সৃষ্টি:

  • ভঙ্গিল পর্বত মূলত গিরিজনি ভূ-আলোড়নের ফলে অনুভূমিক পার্শ্বচাপের প্রভাব দিয়ে পলিস্তরে ভাঁজ সৃষ্টি হয়ে গঠিত হয়।
শিলা:
  • প্রধানত পাললিক শিলা দিয়ে গঠিত হয়। তবে কখনো ম্যাগমার অনুপ্রবেশের কারণে আগ্নেয় শিলা এবং উচ্চ চাপের প্রভাবে রূপান্তরিত শিলাও দেখা যায়।
ভাজ:
  • ভঙ্গিল পর্বতে তিসম ভাজ, অপ্রতিসম ভাজ ও ন্যাপ প্রভৃতি ভাজ দেখা যায়, যা প্রবল পার্শ্বচাপের প্রভাব।
উচ্চতা:
  • অন্যান্য পর্বতের তুলনায় ভঙ্গিল পর্বতের উচ্চতা অনেক বেশি এবং এতে অসংখ্য সুউচ্চ শৃঙ্গ দেখা যায়।
বিস্তৃতি:
  • সুবিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, দৈর্ঘ্য প্রস্থের তুলনায় অনেক বেশি।
জীবাশ্ম:
  • পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হওয়ায় ভঙ্গিল পর্বতে জীবাশ্মও পাওয়া যায়।
ভাগ:
  • ভঙ্গিল পর্বত সময়কাল অনুযায়ী দুটি ভাগে বিভক্ত—
          প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত (যেমন: আরাবল্লি)
          নবীন ভঙ্গিল পর্বত (যেমন: হিমালয়)
ভূমিকম্প:
  • নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ।

প্রশ্ন: আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্য লিখো।

উত্তর:

  • সৃষ্টি:
    আগ্নেয় পর্বত প্রধানত প্লেটের সঞ্চালন, ভূ-আলোড়ন বা ভূপৃষ্ঠের ফাটলের কারণে গলিত ভূ-অভ্যন্তরীণ পদার্থ (ম্যাগমা) বের হয়ে তৈরি হয়।

  • অবস্থান:
    ভূপৃষ্ঠের দুর্বল অঞ্চল বা প্লেট সীমানায় এই পর্বত বেশি দেখা যায়।

  • গাঠনিক উপাদান:
    আগ্নেয়শিলা, ভস্ম, সিন্ডার ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা গঠিত।

  • আকৃতি:
    সাধারণত শঙ্কু বা মূচাকৃতির, তবে কিছু ক্ষেত্রে গম্বুজাকৃতিরও হতে পারে।

  • জ্বালামুখ:
    এক বা একাধিক ম্যাগমা নির্গমন পথ বা জ্বালামুখ থাকে।

  • উচ্চতা:
    মাঝারি ধরনের, তবে সক্রিয় আগ্নেয় পর্বতের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।

  • ঢাল:
    পর্বতের চারপাশের ঢাল সাধারণত খাড়া।

  • ভূমিকম্প:
    অগ্ন্যুৎপাত চলাকালীন আগ্নেয় পার্বত্য অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে।


প্রশ্ন:প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা’ বলতে কী বোঝা যায়? অথবা, প্রশান্ত মহাসাগরের উভয়পাশে আগ্নেয়গিরি কেন অবস্থান করছে?

উত্তর:

‘মেখলা’ শব্দের অর্থ হলো কোমর বন্ধনী বা বেল্ট। পৃথিবীর প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে যেভাবে আগ্নেয়গিরি বৃত্তাকার বা বলয়াকারে অবস্থান করছে, সেটিকেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বলা হয়। পৃথিবীর প্রায় ৭০% সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এই বলয়ের মধ্যেই অবস্থিত।

বিস্তার:
এই আগ্নেয় বলয় প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় পুরো ভৌগলিক সীমা জুড়ে বিস্তৃত। পূর্ব উপকূলে শুরু হয় দক্ষিণ আমেরিকার হর্ন অঞ্চল থেকে এবং আন্দিজ ও রকি পর্বতমালার মধ্য দিয়ে আলাস্কার মধ্যভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। এরপর এটি পশ্চিম উপকূলে কামচাটকা, শাখালিন, জাপান, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্য দিয়ে দক্ষিণে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছায়।

উৎপত্তি বা সৃষ্টির কারণ:
প্রধানত এটি গঠিত হয়েছে অভিসারী পাতের সীমান্তের ক্রিয়ার কারণে। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে, আমেরিকা প্লেটের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের সংঘর্ষে এবং পশ্চিম উপকূলে এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে এই আগ্নেয় বলয় গঠিত হয়েছে। নিমজ্জিত প্লেটগুলো গুরুমণ্ডলের উত্তাপে গলে ম্যাগমায় পরিণত হয় এবং ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে আগ্নেয়গিরি তৈরি করে।

উল্লেখযোগ্য আগ্নেয়গিরি:

  • পূর্ব উপকূল: আকোনকাগুয়া, কটোপ্যাক্সি, পিলি, ওরিজাবা
  • পশ্চিম উপকূল: ফুজিয়ামা, বাটুর, ক্রাকাতায়া, কিলাউইয়া, ইরেবাস

এইভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশে বৃত্তাকারভাবে অবস্থানরত আগ্নেয়গিরিগুলিকে একত্রে প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বলা হয়।


প্রশ্ন: স্তূপ (স্তূপাকৃতির) পর্বতের বৈশিষ্ট্য লিখো।

উত্তর:

  1. সৃষ্টি:
    যখন দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ উঁচু হয়ে উঠে বা চ্যুতির পাশের অংশ নীচে বসে যায়, তখন স্তূপ পর্বত তৈরি হয়।

  2. প্রযুক্ত বল:
    স্তূপ পর্বতের গঠনে অনুভূমিক ও উল্লম্ব বল একসাথে কার্যকর হয়।

  3. শীর্ষভাগ:
    স্তূপ পর্বতের শীর্ষভাগ সাধারণত চ্যাপটা বা সমতলাকৃতির।

  4. উচ্চতা:
    এগুলোর উচ্চতা মধ্যম ধরণের।

  5. ঢাল:
    স্তূপ পর্বতের প্রায় সব দিকের ঢাল খাড়া বা তীব্র।

  6. বিস্তৃতি:
    স্তূপ পর্বত দীর্ঘ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত নয়। সাধারণত স্থানীয় চাপ, টান বা সংকোচনের ফলে মধ্যবর্তী অংশ উঁচু হওয়ায় সৃষ্টি হয়।

  7. উপত্যকার সম্পর্ক:

দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ নীচে বসলে গ্রস্ত উপত্যকা তৈরি হয়।

দুটি বিপরীত চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশে সংকোচনের কারণে র্যাম্প উপত্যকা গঠিত হয়।
গ্রাবেন হলো দুটি স্তূপ পর্বতের মাঝখানে সৃষ্ট উপত্যকা, যা গ্রস্ত উপত্যকার তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম গভীর।
  • উদাহরণ: ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা, জার্মানির গ্রাবেন।

প্রশ্ন:মহীখাত তত্ত্ব অনুসারে হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:

মহীখাত তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন বিজ্ঞানী কোবার। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, বর্তমানে যেখানে হিমালয় অবস্থিত, সেই এলাকায় বহু কোটি বছর আগে একটি অগভীর সাগর বা মহীখাত (Geosyncline) ছিল, যাকে টেথিস সাগর বলা হয়।

টেথিস সাগরের উত্তরে ও দক্ষিণে তখন দুটি প্রাচীন স্থলভাগ বিদ্যমান ছিল—উত্তরে আঙ্গারাল্যান্ড এবং দক্ষিণে গন্ডোয়ানাল্যান্ড। এই উঁচু ভূখণ্ড থেকে প্রবাহিত নদী ও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পলি ও কাদা সঞ্চিত হয়ে টেথিস সাগরকে ধীরে ধীরে ভরাট করেছিল।

উৎপত্তির প্রক্রিয়া:
ভূতাত্ত্বিক সময় অনুযায়ী, টারসিয়ারি যুগে (৭–১২ কোটি বছর আগে) ভূখণ্ড দুটি ধীরে ধীরে একে অপরের দিকে সরে আসে। এর ফলে টেথিস সাগরের সঞ্চিত পাললিক শিলাস্তরে প্রচণ্ড পার্শ্বচাপ সৃষ্টি হয় এবং ভাঁজ বা Fold গঠন হয়। ক্রমশ এই ভাঁজগুলো দৃঢ় এবং উঁচু হয়ে উঠতে থাকে এবং গড়ে উঠে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়

প্রমাণ:
হিমালয়ের শিলাস্তরে যে সকল জলজ জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, সেগুলোর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ মহীখাত তত্ত্বকে সমর্থন করে এবং হিমালয় পর্বতের উৎপত্তির ব্যাখ্যা দেয়।


প্রশ্ন: মানবজীবনে মালভূমির প্রভাব বা গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর:

  1. খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার:
    মালভূমি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান খনিজ পাওয়া যায়। যেমন – কয়লা, লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, নিকেল, অভ্র, চুনাপাথর ইত্যাদি। খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যের কারণে ভারতের ছোটোনাগপুর মালভূমিকে ‘খনিজ ভাণ্ডার’ বলা হয়।

  2. শিল্প স্থাপন:
    মালভূমিতে খনিজ ও কৃষিজাত কাঁচামাল সহজলভ্য হওয়ায় এখানে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেমন – লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, কার্পাস বয়ন শিল্প ইত্যাদি।

  3. কৃষিকাজ:
    মালভূমির খাড়া ঢাল ও বন্ধুর ভূপ্রকৃতি সত্ত্বেও নদী উপত্যকায় উর্বর মাটিতে তুলা, ধান, পেঁয়াজ, আখ ইত্যাদি চাষ করা যায়। খাড়া ঢালে চা, কফি ও রবার চাষ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ – দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে তুলা চাষ।

  4. জলবিদ্যুৎ উৎপাদন:
    মালভূমি অঞ্চলের নদীগুলি খরস্রোতা হওয়ায় সহজেই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। যেমন – দক্ষিণ ভারতের প্রায় সব নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

  5. বনজ সম্পদ:
    মালভূমির প্রাকৃতিক বনভূমি থেকে প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা যায়।

  6. পর্যটন শিল্প:
    মালভূমি অঞ্চলের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটন শিল্পের জন্য উপযোগী। এটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে।

উপসংহার:
মালভূমি মানুষের জীবিকা, অর্থনীতি, শিল্প, কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।




West Bengal Class 9th Geography Suggestion 2025 WBBSE | Class 9 Geography Suggestion 2025 | পশ্চিমবঙ্গ নবম শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন ২০২৫

নবম শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন ২০২৫ – Class 9 Geography Suggestion 2025 :

  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – গ্রহরূপে পৃথিবী (প্রথম অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – পৃথিবীর গতিসমূহ (দ্বিতীয় অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় (তৃতীয় অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ (চতুর্থ অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – দুর্যোগ ও বিপর্যয় (ষষ্ঠ অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – ভারতের সম্পদ (সপ্তম অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – পশ্চিমবঙ্গ (অষ্টম অধ্যায়) Click Here
  • নবম শ্রেণীর ভূগোল – মানচিত্র ও স্কেল (নবম অধ্যায়) Click Here

Post a Comment

We’d love to hear your thoughts! Share your comment below.

Previous Post Next Post