![]() |
নবম শ্রেণী ভূগোল – আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
নবম শ্রেণী ভূগোল – আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
নবম শ্রেণীর ভূগোল ৫ম অধ্যায়: আবহবিকার সম্পূর্ণ MCQ, SAQ ও বিশ্লেষণধর্মী উত্তরসহ
Class 9 Geography Chapter 5 Weathering | Complete MCQ, SAQ & Long Answer Guide
Class 9 Geography Chapter 5 – Weathering: Complete guide with MCQs, short and long questions. Detailed explanations on exfoliation, granular disintegration, chemical weathering, oxidation, and hydration for WB Board students.
[প্রতিটি প্রশ্নের মান: 1]
-
যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলায় ঘটে:
(A) কেবল ভৌত পরিবর্তন
(B) রাসায়নিক পরিবর্তন
(C) উভয় প্রকার পরিবর্তন
(D) কোনো পরিবর্তন হয় না
Ans: (A) কেবল ভৌত পরিবর্তন
-
শুধুমাত্র শিলার আকৃতি পরিবর্তনের জন্য দায়ী আবহবিকারের ধরন হলো:
(A) জৈবিক আবহবিকার
(B) যান্ত্রিক আবহবিকার
(C) জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার
(D) রাসায়নিক আবহবিকার
Ans: (B) যান্ত্রিক আবহবিকার
-
বৃষ্টিপূর্ণ ক্রান্তীয় অঞ্চলে সবচেয়ে প্রাধান্য পায়:
(A) যান্ত্রিক আবহবিকার
(B) রাসায়নিক আবহবিকার
(C) জৈবিক আবহবিকার
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (B) রাসায়নিক আবহবিকার
-
অসম শিলায় সাধারণত কোন প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্রকণা ছড়ায়:
(A) বিচূর্ণন
(B) বোল্ডার ভাঙন
(C) শল্কমোচন
(D) ক্ষুদ্রকণা বিস্তার
Ans: (D) ক্ষুদ্রকণা বিস্তার
-
মৃত্তিকাক্ষয়ের মানবসৃষ্ট কারণ কোনটি:
(A) জলপ্রবাহ
(B) কৃষিকাজ
(C) শিকড় বৃদ্ধি
(D) মাটিতে গর্ত তৈরি
Ans: (B) কৃষিকাজ
-
উষ্ণ মরুভূমিতে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রধান প্রক্রিয়াটি হলো:
(A) লবণ কেলাস গঠন
(B) তুষার খণ্ডীকরণ
(C) ক্ষুদ্রকণা বিস্তার
(D) প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ
Ans: (C) ক্ষুদ্রকণা বিস্তার
-
পাহাড়ি অঞ্চলে শিলাচূর্ণের চলনকে বলা হয়:
(A) যান্ত্রিক আবহবিকার
(B) রাসায়নিক আবহবিকার
(C) পুঞ্জিত ক্ষয়
(D) নগ্নীকরণ
Ans: (C) পুঞ্জিত ক্ষয়
-
শিলার খনিজের সঙ্গে অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় সংঘটিত আবহবিকারের নাম:
(A) অঙ্গারযোজন
(B) আর্দ্রবিশ্লেষণ
(C) জলযোজন
(D) জারণ
Ans: (D) জারণ
-
শিলায় মরিচা ধরার প্রক্রিয়াটি হলো:
(A) জারণ
(B) জলযোজন
(C) আর্দ্রবিশ্লেষণ
(D) অঙ্গারযোজন
Ans: (A) জারণ
-
ক্ষয়ীভবন হল:
(A) স্থির প্রক্রিয়া
(B) গতিশীল প্রক্রিয়া
(C) নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (B) গতিশীল প্রক্রিয়া
-
কাস্ট ভূমি গঠনের প্রক্রিয়াটি:
(A) জারণ
(B) অঙ্গারযোজন
(C) আর্দ্র-বিশ্লেষণ
(D) জৈবিক আবহবিকার
Ans: (B) অঙ্গারযোজন
-
চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে বেশি দেখা যায়:
(A) কার্বোনেশন
(B) হাইড্রেশন
(C) হাইড্রোলিসিস
(D) অক্সিডেশন
Ans: (A) কার্বোনেশন
-
মরুভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয় ঘটে:
(A) নদীর দ্বারা
(B) হিমবাহের দ্বারা
(C) বায়ুপ্রবাহের দ্বারা
(D) মানুষের দ্বারা
Ans: (C) বায়ুপ্রবাহের দ্বারা
-
গ্রানাইট টর গঠনের প্রক্রিয়া:
(A) শল্কমোচন
(B) কার্বোনেশন
(C) জলযোজন
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (A) শল্কমোচন
-
উদ্ভিদহীন অতি ঢালু ভূমিতে যে গভীর ক্ষয় হয় তাকে বলা হয়:
(A) পাতক্ষয়
(B) র্যাভাইন ক্ষয়
(C) নালি ক্ষয়
(D) খাতক্ষয়
Ans: (B) র্যাভাইন ক্ষয়
নবম শ্রেণী ভূগোল – আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান: 1]
-
শস্যের শিকড় দিয়ে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা পদ্ধতিকে কী বলে?
Ans: মালচিং (Mulching) -
মরুভূমিতে বিকেলের সময় গুলি ছোড়ার মতো শব্দ শোনাতে যে প্রক্রিয়া কাজ করে, তা হলো:
Ans: ক্ষুদ্রকণা বিস্তার -
কোন আবহবিকারের ফলে শিলায় মরিচা ধরে?
Ans: জারণ -
হিউমাস গঠনের প্রক্রিয়ার নাম:
Ans: হিউমিফিকেশন -
পর্বতের ঢালে শঙ্কু আকৃতির শিলাচূর্ণকে বলা হয়:
Ans: ট্যালাস -
জারণ প্রক্রিয়ায় কোন গ্যাস প্রয়োজন?
Ans: অক্সিজেন -
থর মরুভূমিতে সবচেয়ে কার্যকরী যান্ত্রিক প্রক্রিয়া:
Ans: ক্ষুদ্রকণা বিস্তার -
আবহবিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল:
Ans: মৃত্তিকা সৃষ্টি -
নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়:
Ans: রাসায়নিক আবহবিকার -
জল বা তুষার কেলাসে পরিণত হলে আয়তন:
Ans: বৃদ্ধি পায়
সংক্ষিপ্ত | আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) নবম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান: 2]
প্রশ্ন: 1. ট্যাফোনি কী?
Ans: সমুদ্র উপকূলে দেখা যায় এমন শিলার উপরিভাগে ছোট-বড় গহ্বর বা গর্তকে ট্যাফোনি বলা হয়। এগুলোর ব্যাস সাধারণত ১ সেমি থেকে ১ মিটার পর্যন্ত হয়। এটি প্রধানত লবণের রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে শিলার উপরিভাগে গঠিত হয়।
প্রশ্ন:2. নগ্নীভবন কিভাবে ঘটে?
Ans: যখন আবহবিকার, স্খলন এবং ক্ষয়ীভবন একসাথে কাজ করে, তখন শিলার উপরের স্তরের চূর্ণিত পদার্থ অপসারিত হয়ে নীচের মূল শিলা উন্মুক্ত হয়। এই মিলিত প্রক্রিয়াকেই নগ্নীভবন বলা হয়।
প্রশ্ন: 3. আবহবিকার কাকে বলে?
Ans: আবহবিকার হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলার উপরের অংশ ভাঙা, চূর্ণিত বা রাসায়নিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করে। এটি হতে পারে যান্ত্রিক, জৈবিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
প্রশ্ন:4. ক্ষয়ীভবন কাকে বলে?
Ans: যে প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের চূর্ণিত শিলা প্রাকৃতিক শক্তি যেমন নদী, বায়ু বা হিমবাহ দ্বারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো হয়, তাকে ক্ষয়ীভবন বলা হয়। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন: 5. প্রস্তরচাঁই খণ্ডিকরণ কাকে বলে?
Ans: বড় কোনো শিলাখণ্ড বা শিলাস্তর সমান্তরাল বা সমকোণী ফাটলের মাধ্যমে ছোট খণ্ডে ভাগ হলে, সেই প্রক্রিয়াটিকে প্রস্তরচাঁই খণ্ডিকরণ বলা হয়।
প্রশ্ন: 6. জারণ বা অক্সিডেশন বলতে কী বোঝায়?
Ans: শিলার মধ্যে থাকা লোহা বা লোহার খনিজ যখন বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে, তখন শিলায় মরিচা ধরা বা জারণ ঘটে। এই প্রক্রিয়াটিকেই অক্সিডেশন বা জারণ বলা হয়।
প্রশ্ন: 7 . জলযোজন বা হাইড্রেশন কাকে বলে?
Ans: শিলার খনিজ পদার্থের সঙ্গে জল সংযুক্ত হয়ে রাসায়নিকভাবে শিলা পরিবর্তিত হলে, সেই প্রক্রিয়াটিকে হাইড্রেশন বা জলযোজন বলা হয়। এটি রাসায়নিক আবহবিকারের একটি উদাহরণ।
প্রশ্ন: 8. আরোহণ কাকে বলে?
Ans: যে প্রক্রিয়ায় নদী, হিমবাহ, বায়ু বা অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা কণিকা, বালি বা মাটি সঞ্চিত হয়ে নতুন ভূমি তৈরি করে, সেই প্রক্রিয়াকে আরোহণ বলা হয়। এটি নতুন ভূ-রূপের সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা | আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) নবম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান: 3]
প্রশ্ন: 1. শল্কমোচন বলতে কী বোঝ?
Ans: যখন শিলার উপরের এবং নীচের স্তরের তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফলে প্রসারণ ও সংকোচনের তারতম্য ঘটে, তখন শিলার পৃষ্ঠে ফাটল সৃষ্টি হয়। এর ফলে উপরের শিলার স্তরটি ধীরে ধীরে নীচের স্তর থেকে খুলে এসে পেঁয়াজের খোসার মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকেই শল্কমোচন বলা হয়।
প্রশ্ন: 2. ক্ষুদ্র কণা বিস্তার কাকে বলে?
Ans: মরুভূমি অঞ্চলে তাপমাত্রার বড় তারতম্য এবং শিলার বিভিন্ন খনিজ পদার্থের ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এই চূর্ণিত অংশগুলোকে ধীরে ধীরে বায়ুপ্রবাহে ছড়িয়ে দিয়ে নেয়া বা প্রসারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ক্ষুদ্র কণা বিস্তার বলা হয়।
প্রশ্ন: 3. অঙ্কারযোজন বা কার্বনেশন কী?
Ans: চুনাপাথর বা ক্যালসিয়াম কার্বনেটযুক্ত শিলার সঙ্গে কার্বন-ডাই-অক্সাইডযুক্ত পানি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মিলিত হয়ে ক্যালসিয়াম বাই-কার্বনেট তৈরি করে। এই প্রক্রিয়াকেই অঙ্কারযোজন বা কার্বনেশন বলা হয়। এটি চুনাপাথরভিত্তিক ভূ-রূপের সৃষ্টি এবং ক্ষয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: 4. হিউমাস কী?
Ans: উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃত দেহভাগ যখন মৃত্তিকা বা শিলার উপরে জমে, তখন তা সূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীব দ্বারা পচে এবং জৈব পদার্থের জটিল রূপ ধারণ করে। এই গাঢ় বাদামি বা কালচে রঙের জৈব পদার্থকে হিউমাস বলা হয়।
প্রশ্ন: 5. জৈব আবহবিকার একই সঙ্গে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক’ – প্রমাণ করো।
Ans: উদ্ভিদ ও প্রাণীর কার্যকলাপ শিলার ক্ষয় ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ভিদের শিকড় শিলায় প্রবেশ করে চাপ সৃষ্টি করে, ফলে শিলা ভাঙে (যান্ত্রিক প্রভাব)। এছাড়া মস, লাইকেন বা অন্যান্য শৈবাল শিলার উপর জন্ম নিয়ে হিউমাস গঠন করে, যা শিলার খনিজ পদার্থকে রাসায়নিকভাবে ভেঙে দেয় (রাসায়নিক প্রভাব)। তাই জৈব আবহবিকার একসাথে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সমন্বয়।
জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার কীভাবে ঘটে?
Ans: উদ্ভিদের শিকড় শিলার মধ্যে প্রবেশ করে শিলায় চাপ সৃষ্টি করে। এতে শিলাসমূহ ধীরে ধীরে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া ইঁদুর, ছুঁচো, কেঁচো, খরগোশ প্রভৃতি প্রাণী শিলার মধ্যে গর্ত খুঁড়ে শিলাকে দুর্বল করে এবং ক্ষয় বৃদ্ধি করে।
জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার কীভাবে ঘটে?
Ans: শৈবাল, মস এবং লাইকেনের মতো জীব শিলার উপর জন্মায়। বৃষ্টির জল এবং হিউমাসের সংস্পর্শে এসে হিউমিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। শিলার খনিজ এই অ্যাসিডের সংস্পর্শে রাসায়নিকভাবে ভেঙে যায়, ফলে শিলায় আবহবিকার ঘটে।
রাসায়নিক আবহবিকারে শিলার কী কী পরিবর্তন ঘটে?
Ans: রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে শিলার গঠনকারী মৌলিক খনিজ পরিবর্তিত হয়ে গৌণ খনিজে পরিণত হয়।
- চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিক কার্বন ডাই অক্সাইডের বিক্রিয়ার মাধ্যমে স্ট্যালাকটাইট ও স্ট্যালাকমাইটের মতো ভূমিরূপ তৈরি হয়।
- লোহার খনিজের সঙ্গে অক্সিজেন বিক্রিয়ায় লোহা গৌণ খনিজে পরিণত হয়।
- জলযোজন প্রক্রিয়ায় খনিজের দৃঢ়তা হ্রাস পায় এবং শিলা সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন: 6. আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের প্রধান তিনটি পার্থক্য:
Ans:
১. প্রক্রিয়ার ধরন:
- আবহবিকার: আবহাওয়ার উপাদান যেমন তাপমাত্রা, বৃষ্টি প্রভৃতি শিলার নিজ স্থানে ভেঙে বা বিচ্ছিন্ন হয়।
- ক্ষয়ীভবন: প্রাকৃতিক শক্তি যেমন নদী, হিমবাহ, বায়ু ইত্যাদি শিলার চূর্ণিত অংশ অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করে।
২. নির্ভরশীলতা:
- আবহবিকার ক্ষয়ীভবনের উপর নির্ভরশীল নয়।
- ক্ষয়ীভবন আবহবিকারের প্রভাবে ঘটে।
৩. গতি ও প্রকৃতি:
- আবহবিকার: ধীরগতিসম্পন্ন, স্থিতিশীল প্রক্রিয়া।
- ক্ষয়ীভবন: দ্রুতগতিসম্পন্ন, গতিশীল প্রক্রিয়া।
রচনাধর্মী/বিশ্লেষণধর্মী | আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) নবম শ্রেণীর ভূগোল বড় প্রশ্ন ও উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান: 5]
প্রশ্ন: 1. রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি আলোচনা করো।
উত্তর:
রাসায়নিক আবহবিকার হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিলার খনিজ পদার্থ বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান যেমন অক্সিজেন (O₂), কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂), জলীয় বাষ্প ইত্যাদির প্রভাবে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়। এর ফলে শিলা ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায় এবং মূল খনিজ পদার্থ নতুন গৌণ খনিজে পরিণত হয়। সাধারণত বৃষ্টিপূর্ণ উষ্ণ অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
রাসায়নিক আবহবিকারের প্রধান তিনটি পদ্ধতি হলো –
১. অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ
২. জলযোজন বা আর্দ্রকরণ
৩. জারণ
এর বাইরে দ্রবণ ও আর্দ্র বিশ্লেষণও রাসায়নিক আবহবিকারের অন্তর্ভুক্ত।
(ক) অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ:
অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ হল রাসায়নিক আবহবিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এতে শিলার খনিজ পদার্থ প্রাকৃতিক কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় মিলিত হয়। এই বিক্রিয়ার ফলে খনিজ পদার্থের গঠন পরিবর্তিত হয়ে নতুন খনিজ তৈরি হয় এবং শিলা সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ, চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে কার্বনিকরণ প্রক্রিয়ায় চুনাপাথর ধীরে ধীরে ভেঙে নানা ধরনের ভূমিরূপ যেমন গুহা, স্ট্যালাকটাইট ও স্ট্যালাকমাইট সৃষ্টি করে।
(খ) জলযোজন বা আর্দ্রকরণ:
জলযোজন বা আর্দ্রকরণ হল রাসায়নিক আবহবিকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এতে শিলার খনিজ পদার্থের সঙ্গে জল সংযুক্ত হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এর ফলে খনিজের আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং তার রাসায়নিক গুণাগুণ পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, উৎকৃষ্ট লৌহ আকরিক হেমাটাইটের সঙ্গে জল যুক্ত হলে লৌহ নিকৃষ্ট আকারের লিমোনাইটে পরিণত হয়, যা সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
(গ) জারণ:
জারণ হল রাসায়নিক আবহবিকারের একটি প্রক্রিয়া যেখানে শিলার খনিজ পদার্থ বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে লৌহের ক্ষেত্রে, লোহার সঙ্গে অক্সিজেন যুক্ত হলে লোহা হলুদ বা বাদামি রঙের যৌগে রূপান্তরিত হয়। ফলে লোহা সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এটি একটি সাধারণ এবং প্রাকৃতিক রাসায়নিক প্রক্রিয়া, যা শিলার গঠনকে দীর্ঘ সময় ধরে দুর্বল করে।
প্রশ্ন: 2. অক্সিডেশন বা জারণ প্রক্রিয়ায় শিলা কিভাবে বিয়োজিত হয় (উদাহরণসহ)
Ans:
পদ্ধতি:
শিলার মধ্যে লৌহযুক্ত খনিজ পদার্থ যখন বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় যুক্ত হয়, তখন অক্সিডেশন বা জারণ প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। প্রাথমিকভাবে শিলায় থাকা লোহা ‘ফেরাস অক্সাইড’ আকারে থাকে, যা শক্তিশালী এবং সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত নয়।
কিন্তু জারণ প্রক্রিয়ায়, বাতাসের অক্সিজেন এবং পানির সংস্পর্শে আসার ফলে, লোহা ‘ফেরিক অক্সাইডে’ পরিণত হয়। এই পরিবর্তনের ফলে লোহা ধীরে ধীরে সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং মূল খনিজ গৌণ খনিজে পরিণত হয়ে শিলা বিয়োজিত হয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়া:
[
4FeO ,(লোহা) + 2H_2O ,(জল) + O_2 ,(অক্সিজেন) \rightarrow 2Fe_2O_3 \cdot 3H_2O ,(লিমোনাইট)
]
উদাহরণ:
শিলায় মরচে ধরা হল জারণ প্রক্রিয়ার একটি সাধারণ উদাহরণ। শিলার লৌহযুক্ত খনিজ বাতাস ও জল সঙ্গে বিক্রিয়া করলে লোহা ফেরাস অক্সাইড থেকে ফেরিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। ফলে শিলার উপর বাদামি বা হলুদ রঙের মরচে পড়ে এবং খনিজটি সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন: যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি (সংক্ষেপে)
Ans:
যান্ত্রিক আবহবিকার হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে প্রাকৃতিক শক্তি যেমন উষ্ণতা, বৃষ্টি, তুষার, নদী, বায়ু, গাছপালা ও জীবজন্তুর কার্যক্রমের প্রভাবে শিলা ছোট ছোট খণ্ড বা চূর্ণে পরিণত হয়, তবে শিলায় কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না।
তাপমাত্রার তারতম্য, তুষার, জল এবং চাপের হ্রাসের মাধ্যমে যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে। সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, তুষার ও বৃষ্টির জল প্রধান ভূমিকা পালন করে।
যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রধান তিনটি পদ্ধতি হলো –
(ক) খণ্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ:
শিলা তাপের সুপরিবাহী নয়। মরুভূমি অঞ্চলে দিনে ও রাতে তাপমাত্রার বড় তারতম্য শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশে প্রসারণ ও সংকোচন ঘটায়। দীর্ঘ সময়ে ফাটল তৈরি হয় এবং শিলার খণ্ড পৃথক হয়ে ভগ্ন স্তূপে পরিণত হয়। ভেঙে যাওয়া শিলার আকৃতি সাধারণত বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রের মতো হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে খণ্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ বলা হয়।
(খ) গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন:
শিলার উপরের স্তর তাপের কারণে প্রসারিত ও সংকুচিত হয়। দিনের গরম এবং রাতের ঠাণ্ডার তারতম্যের ফলে শিলার উপরের স্তর নীচের স্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায়। এতে শিলার খণ্ড গোলাকার ও মসৃণ আকার ধারণ করে। এই প্রক্রিয়াটিকে গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন বলা হয়।
(গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ:
বিষম গুণযুক্ত ও বড় দানাযুক্ত শিলার খণ্ড তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সমানভাবে প্রসারিত বা সংকুচিত হয় না। ফলে শিলার বিভিন্ন অংশে ভিন্ন টান সৃষ্টি হয় এবং শিলা ফেটে ছোট ছোট কণায় পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলা হয়।
নবম শ্রেণীর ভূগোল ৫ম অধ্যায় – আবহবিকার: সম্পূর্ণ MCQ, SAQ ও বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর সহ বিস্তারিত রিভিশন গাইড। শল্কমোচন, ক্ষুদ্রকণা বিশরণ, রাসায়নিক আবহবিকার, জারণ ও জলযোজনসহ সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এক জায়গায়।
Class 9 Geography Chapter 5 – Weathering: Complete guide with MCQs, short and long questions. Detailed explanations on exfoliation, granular disintegration, chemical weathering, oxidation, and hydration for WB Board students.
West Bengal Class 9th Geography Suggestion 2025 WBBSE | Class 9 Geography Suggestion 2025 | পশ্চিমবঙ্গ নবম শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন ২০২৫
নবম শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন ২০২৫ – Class 9 Geography Suggestion 2025 :
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – গ্রহরূপে পৃথিবী (প্রথম অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – পৃথিবীর গতিসমূহ (দ্বিতীয় অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় (তৃতীয় অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ (চতুর্থ অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – আবহবিকার (পঞ্চম অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – দুর্যোগ ও বিপর্যয় (ষষ্ঠ অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – ভারতের সম্পদ (সপ্তম অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – পশ্চিমবঙ্গ (অষ্টম অধ্যায়) Click Here
- নবম শ্রেণীর ভূগোল – মানচিত্র ও স্কেল (নবম অধ্যায়) Click Here